শ্রী গুরুর অমৃত প্রবচন

Shree Gurur Amrita Prabachan

গুরু -অবতার পরম-আচার্য্য শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেব

Guru Avatar Param Acharya Shree Shree Jnaneswardev

তত্ত্ব ও তাত্পর্য্য

Tatya and Tatparya

শিশু থেকে কিশোর

Sishu Theke Kishore

শিক্ষা মূলক গল্প গাথা

Sikshya Mulak Galpa Gatha

শ্রী গুরুর অমৃত প্রবচন ২য খন্ড

Shree Gurur Amrita Prabachan 2nd Part

জীবন গড়ার গল্প

Jiban Garar Galpa

Jibaner Samadhan Sutra

Jibaner Samadhan Sutra

Vokti Argha

Vokti Argha

Lila Katha

Lila Katha
Load more...
Shree Gurur Amrita Prabachan

শ্রী গুরুর অমৃত প্রবচন



*

*

মানুষ কত সহজে জীবত্ব অতিক্রম করে মানবত্ব অর্জন করতে পারে এরপর মানবত্ব থেকে দেবত্ব ও দেবত্ব থেকে ঈশ্বরত্বে পৌঁছাতে পারে এবং শেষে ব্রহ্মানুভূতি লাভ করতে পারে – এই গূঢ় তত্ত্বটি সহজে বোঝান গুরু অবতার শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেব ।  তিনি বলেন – অন্তর হতে খারাপ যা কিছু দূর করে দাও তাহলেই সকল ভাল স্থান পাবে । সংসার শিক্ষার মন্দির । সংযম , ধৈর্য্য , নিষ্কাম কর্ম , সেবা ভাব সবই সংসার থেকে শেখা যায় এবং সংসারের মধ্যে থেকে ভগবৎ লাভ করা যায় । তবে এখানে এসে তার উপায়টি জেনে যাও ।  গুরু কে , গুরু কী , গুরু কোথায় , গুরুর প্রয়োজন কেন যেমন সহজ ভাবে বোঝান তেমনই শরীরতত্ত্ব , সংসারতত্ত্ব , নানা আধ্যাত্মিক তত্ত্বকে তিনি সহজে ব্যাখা করেন ।  কেমন করে ভক্তি লাভ করা যায় , প্রকৃত জ্ঞান কী , ত্যাগের মাহাত্ম্য কী – এই সকল দু প্রশ্নের উত্তর সহজ সাবলীল গল্পের মাধ্যমে জানান । সংসারের মধ্যে থেকে কেমন করে সুখ – শান্তি – আনন্দ লাভ করা যাবে , কেমনেই বা সংসারী মানুষ অভাবের মধ্যেও ভগবৎ লাভ করতে পারবে ভক্তদের মাঝে তার সহজ উপায়টি জানান । তাই দলে দলে ভক্তগণ তার কাছে আশ্রয় লাভের জন্য ছুটে আস্তে থাকেন ।

Guru Avatar Param Acharya Shree Shree Jnaneswardev

গুরু -অবতার পরম-আচার্য্য
শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেব



*

*

*

শ্রীগুরু জ্ঞানেশ্বরদেব মানুষের মনকে মলিনতা মুক্ত করে প্রকৃত আনন্দের সন্ধান দিতে সকাল থেকে রাত্রি দশটা পর্যন্ত ভক্তদের উপস্থিতিতে সংসার তত্ত্ব , দেহ তত্ত্ব , ঈশ্বর তত্ত্ব , ব্রহ্ম তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে শোনাতেন । এই অখন্ড তত্ত্ব ধারার বুঝি শেষ নাই । আবার ভক্তদের অনুপস্থিতিতে দিনে ও রাতে কত তত্ত্ব যে ডাইরিতে নথিবদ্ধ করেছেন তারও শেষ নাই । কখনো সাধারন ভাবে গদ্যে লিখিত , কখনো বা কবিতাকারে , আবার কখনো গানের আকারে তা তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন । কখনো তিনি গানের মাধ্যমে উপদেশ দিতেন , আবার কখনো দিতে দিতে গান করতেন । তাৎক্ষণিক ভাবে রচনা করে সুরদৃষ্টি করে গান করতেন । আর তাৎক্ষণিক ভাবে রচিত এবং শত সহস্র গানের কোন হদিস পাওয়া গেল না । যেমন – মন তোমারই যাবে ভজনে গুরু নাম .................. কখনো সৃষ্টিতত্ত্ব , কখনো সংসারতত্ত্ব , কোথাও সাধনতত্ত্ব , কালীতত্ত্ব , কৃষ্ণতত্ত্ব , গুরুতত্ত্ব , ব্রহ্মতত্ত্ব , ব্রহ্মময়ীর তত্ত্ব প্রকাশ করেছেন । কোনটি প্রার্থনা সঙ্গীত , কোনটি মাতৃসঙ্গীত , কোনটি গুরু জ্ঞান নানা ভাবের আবেশে রচিত । কখনো ভক্ত হৃদয়ের জ্বালাকে প্রকাশ করেছেন । কখনো দাস হয়ে গুরুর কাছে প্রার্থনা করেছেন , কখনো মা হয়ে সন্তানরূপী গোপালের জন্য কাঁদছেন , কখনো শ্রীরাধা হয়ে শ্রীকৃষ্ণের জন্য ব্যাকুল । কখনো সহজে ভগবৎ লাভের উপায় জানাতে ভক্ত শিষ্যদের উপদেশ দিচ্ছেন । আর এই সকল কবিতার মাধ্যমে , গানের মাধ্যমে ডাইরিতে প্রকাশ করে গেছেন । সেই সকল সংগৃহীত কবিতা ও গান সমূহকে “ অমৃত ” নামে দুটি খন্ডে প্রকাশ করা হল ।

Tatya and Tatparya

তত্ত্ব ও তাত্পর্য্য



*

শিশু থেকে বৃদ্ধ – বৃদ্ধা পর্যন্ত , সংসারী বা সন্ন্যাসী সকলেই একই লক্ষ্য সুখ , আনন্দ ও শান্তি লাভ করা । গুরু- অবতার শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বর দেব সেই উদ্দ্যেশে সংসারতত্ত্ব , দেবতত্ত্ব , ঈশ্বরতত্ত্ব , ব্রহ্মতত্ত্ব ইত্যাদি নানা তত্ত্ব ব্যাখা করে শোনালেন এবং সংসারের দুঃখ কষ্ট জ্বালা যন্ত্রণা হতে মুক্ত হয়ে কেমন করে ঈশ্বরকে দেখা যেতে পারে তার সহজ উপায়টি জানালেন । সাধারন মানুষের মনে জিজ্ঞাসা জাগে নকল গুরুতে সব ভর্ত্তি তাহলে আসল গুরুকে চিনব কেমন করে , জপ – তপ করেই কী লাভ , সংসারে তো দিব্যি আছি তাহলে ওই পথে যাব কেন , তা আমার ছেলে – মেয়ের কোনো উপকারে আসবে কি না , তাতে সংসারে সুখ – স্বাচ্ছন্দ বাড়বে কি না – মানুষের মনের এই সকল প্রশ্নের উত্তর এবং তাদের নানা সমস্যার সমাধান এই গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে । সহজ সরল অল্প বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা না হয় সহজেই ঈশ্বরের কথা মেনে নিলেন কিন্তু আইনস্টাইন , আইজ্যাক নিউটন , প্রমুখ মহান বিজ্ঞানীরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব কিভাবে স্বীকার করে নিলেন এবং এ সম্বন্ধে তারা কী বললেন এই গ্রন্থে তা তুলে ধরা হয়েছে । এই জগতে মাঝের শ্রেনীর মানুষদের মনে নানা জটিল প্রশ্নে বা ঈশ্বর যদি সকল সুখ শান্তি আনন্দের মূল হন এবং সকল সম্পদের অধিকারী হন তাহলে তাকে পেলেই তো সকল অভাব মিটে যাবে । কিন্তু আদৌ ঈশ্বর আছেন তো , তার দেখা পাওয়া যায় কি – এই গ্রন্থে এই সকল জটিল জিজ্ঞাসার সহজ সমাধান বর্ননা করা হয়েছে । সংসারী বা আধ্যাত্মিক পিপাসু মানুষের মনে উদিত নানা বিষয়ের তত্ত্ব ও তার যথার্থতা সহজ সরলভাবে এই গল্পে তুলে ধরা হয়েছে বলে এই গ্রন্থটি “ তত্ত্ব ও তাৎপর্য ” নামের সার্থকতা লাভ করেছে ।

Sishu Theke Kishore

শিশু থেকে কিশোর



*

বাড়ীর ভিতটি মজবুত হলে আর ভাবনা থাকে না । তখন বাড়ীটি দোতলা হোক আর তিন তলাই হোক বাড়িটি ভেঙে পড়ার কোন ভয় থাকে না । মানুষের ভিত হল তার শৈশব কাল । শিশু মনটিকে যেমন ভাবে গড়ে নেওয়া যাবে শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত সেই শিক্ষার ছাপটি থেকে যাবে । তাই শৈশব থেকে তার আচরনের শিক্ষা দিতে হয় । নিয়ম শৃঙ্খলা শেখাতে হয় , জপ – ধ্যান ,পূজা - পাঠের দ্বারা মনকে শান্ত করার শিক্ষা দিতে হয় , শিশু মনে ভক্তি শ্রদ্ধার উদয় ঘটাতে হয় যাতে পিতা মাতা ও সকল গুরুজনকে শ্রদ্ধাভক্তি করতে পারে, দেশের প্রতি ভক্তি থাকে এবং ধর্মে থাকে । এই জন্য শিশুকাল থেকেই একটি শিশুকে পূজা ও প্রার্থনা করা শেখাতে হয় । এই সকল উদ্দেশ্যে শিশু মনের বিকাশের জন্য এবং খেলার ছলে কিছু শিক্ষনীয় অভ্যাস গঠনের জন্য ভবিষ্যতে প্রকৃত মানুষ রূপে তাকে গড়ে তুলতে ছোট পুস্তিকাটি প্রকাশ করা হল ।

Sikshya Mulak Galpa Gatha

শিক্ষা মূলক গল্প গাথা



*

যে রোগের যে ওষুধ , রোগীকে সেই ওষুধ খেতে হয় । কিন্তু ওষুধ তিতো বলে রোগী যদি তা না খায় তাহলে তার মৃত্যু অনিবার্য্য । তা জেনে ডাক্তার মিষ্টি ওষুধের ব্যবস্থা করে দেন । সৎ পথ , সত্য পথের আর্দশে জীবন সুন্দর হয় কিন্তু তা পালন করে চলা অতীব কঠিন । লোভ , লালসা , ঈর্ষা , হিংসা , অহংকার ইত্যাদি খারাপ দিক গুলো সরে গেলে প্রেম , প্রীতি , সহানুভূতি , ভালোবাসা সরলতায় জীবন সুখের হয় , আনন্দময় হয় , শান্তিতে ভরে ওঠে – এই সব নানা নীরস খটখটে তত্ত্ব কথা সকল সময় সকলের কাছে ভালো লাগে না । বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী , বালক-বালিকা ও যুবক-যুবতী এদের তো ভালো লাগেই না । তাই শুকনো খটখটে খাবারকে তেল বা ঘি – এ ভেজে মিষ্টি রসে ডুবিয়ে পরিবেশন করলে তা যেমন চেটেপুটে খায় সেই প্রকারে দ্রষ্টা শ্রীগুরু জ্ঞানেশ্বরদেব নীরস তত্ত্ব কথাকে সরস গল্পের মাধ্যমে যখন ব্যাখা করেন তা সহজেই সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে । এই কারনে বেদ , পুরাণ , ভাগবৎ ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ থেকে কিছু তত্ত্বমূলক গল্প ও শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেবের মুখে বলা কিছু উপদেশ মূলক গল্প তুলে ধরে এই গ্রন্থটি রচনা করা হল । অহংকারের পরিনতি কি , ঈর্ষা- হিংসা- লোভ- লালসায় কী ক্ষতি হয় , ঠিক মতো মনের শিক্ষা না পেলে কী ক্ষতি হয় , জেদ ও একাগ্রতার সুফল ও কুফল , কিভাবে প্রিয়ত্ব লাভ করা যায় , পরিবেশ কেমন করে মানুষকে গড়ে তোলে , ভক্তিতে কী লাভ , আচরণের শিক্ষায় জ্ঞানলাভ ইত্যাদি নানা তত্ত্ব ও উপদেশ মূলক গল্প এই গ্রন্থে পরিবেশিত হল ।

Shree Gurur Amrita Prabachan 2nd Part

শ্রী গুরুর অমৃত প্রবচন ২য খন্ড



*

মানুষ কত সহজে জীবত্ব অতিক্রম করে মানবত্ব অর্জন করতে পারে এরপর মানবত্ব থেকে দেবত্ব ও দেবত্ব থেকে ঈশ্বরত্বে পৌঁছাতে পারে এবং শেষে ব্রহ্মানুভূতি লাভ করতে পারে – এই গূঢ় তত্ত্বটি সহজে বোঝান গুরু অবতার শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেব ।  তিনি বলেন – অন্তর হতে খারাপ যা কিছু দূর করে দাও তাহলেই সকল ভাল স্থান পাবে । সংসার শিক্ষার মন্দির । সংযম , ধৈর্য্য , নিষ্কাম কর্ম , সেবা ভাব সবই সংসার থেকে শেখা যায় এবং সংসারের মধ্যে থেকে ভগবৎ লাভ করা যায় । তবে এখানে এসে তার উপায়টি জেনে যাও ।  গুরু কে , গুরু কী , গুরু কোথায় , গুরুর প্রয়োজন কেন যেমন সহজ ভাবে বোঝান তেমনই শরীরতত্ত্ব , সংসারতত্ত্ব , নানা আধ্যাত্মিক তত্ত্বকে তিনি সহজে ব্যাখা করেন ।  কেমন করে ভক্তি লাভ করা যায় , প্রকৃত জ্ঞান কী , ত্যাগের মাহাত্ম্য কী – এই সকল দু প্রশ্নের উত্তর সহজ সাবলীল গল্পের মাধ্যমে জানান । সংসারের মধ্যে থেকে কেমন করে সুখ – শান্তি – আনন্দ লাভ করা যাবে , কেমনেই বা সংসারী মানুষ অভাবের মধ্যেও ভগবৎ লাভ করতে পারবে ভক্তদের মাঝে তার সহজ উপায়টি জানান । তাই দলে দলে ভক্তগণ তার কাছে আশ্রয় লাভের জন্য ছুটে আস্তে থাকেন ।

Jiban Garar Galpa

জীবন গড়ার গল্প



*

ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিফলন ঘটে সংসারে ও সমাজে । জীবনে সু বা কু অভ্যাসের প্রভাবে মানুষ হয় ভালো বা খারাপ । মানুষ সুন্দর হলে সংসার ও সমাজ সুন্দর ভাবে গড়ে ওঠে । অন্যথায় , খারাপ কাজে ও অনৈতিক গুণে মানুষের জীবন নষ্ট হলে তাদের সংসারেও শান্তি বিঘ্নিত হয় । ঐ বদ গুনগুলোকে সরাতে পারলেই প্রতিটি জীবন , প্রতিটি সংসার ও প্রতিটি সমাজ আনন্দময় হয়ে উঠবে । সকল বদ অভ্যাস ও ক্ষতিকর দিকগুলি পরিহার করে সদগুণ ও সুঅভ্যাসের দ্বারা ও সুন্দর জীবন গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে সকলেই, বিশেষ করে কিশোর – কিশোরী ও যুবক – যুবতীরা । শৈশব , কৈশোর ও যৌবন হল জীবনকে সঠিক ভাবে গড়ে তোলার উপযুক্ত সময় । জীবন থেকে হয় জীবনের শিক্ষালাভ । সেই শিক্ষালাভের উদ্দ্যেশেই কিন্তু মানুষের জীবনের বদ অভ্যাস , তাদের কুপ্রভাব ও পরিনতি গল্পাকারে তুলে ধরা হয়েছে । আ-জীবনে সৎ ও সুন্দর হওয়ার জন্য কিছু নীতি কথা , কিছু উপদেশ গল্পের আকারে তাদের সামনে উপস্থাপিত করা হয়েছে । আসলে জীবনকে সঠিক ভাবে গড়ার উদ্দ্যেশে রচিত বলেই এই গ্রন্থের নাম দেওয়া হয়েছে “জীবন গড়ার গল্প” ।

Jibaner Samadhan Sutra

Jibaner Samadhan Sutra



*

*

*

চারিদিকে কেবল ঈর্ষা – হিংসা , লোভ –লালসা আর চরম স্বার্থপরতা। দুঃখ – জ্বালা - যন্ত্রনায় অস্থির ,হতাশাগ্রস্ত , উদ্বেগ ও অশান্তিতে পূর্ণ তখন তাদের তা শান্ত মনে শান্তির বার্ত্তা নিয়ে অতি সাধারণ বেশে আবির্ভূত হলেন পুরষোত্তম গুরু অবতার পরম আচার্য শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেব । তিনি ভালোবাসা , মৈত্রীভাব , সহানুভূতি , নিঃস্বার্থ কর্ম ও সেবার উপদেশ দিলেন । তার মতে - প্রতিটি মানুষ সৎ , নির্ভীক , নিরলস ও চরিত্রবান হলে প্রতিটি সংসার , সমাজ ও দেশ সুখ সমৃদ্ধিতে পূর্ণ হয়ে উঠবে । তাই তিনি মন সংযম , ধ্যান , যোগাসন , ব্রহ্মচর্য , নৈতিক শিক্ষা ও লেখাপড়ার উপর জোর দেন । তিনি বলেন – সৎ হও , নিয়ম-আদর্শে চল , চিন্তা ছেড়ে সমষ্টির কথা ভাব । ঈর্ষা – হিংসা , লোভ – লালসা , কামনা – বাসনা , সন্দেহ – অবিশ্বাস , অহংকার – স্বার্থপরতা ত্যাগ করে সকলকে আত্মীয় ভেবে শ্রদ্ধা , ভক্তি , বিশ্বাস , প্রেম , প্রীতি , ভালোবাসায় আপন করে নাও । আমিত্ব ভাব সকল দুঃখের মূল । তাই আমিত্ব ভাব ত্যাগ কর । জাগতিক সকল কিছুই ঈশ্বরের ভাব এবং সকল কর্ম ঈশ্বরের ভেবে কর । ত্যাগ ও সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে পরম আনন্দ অনুভব কর । আত্মবিচার ও আত্মজ্ঞান লাভের দ্বারা চরম সত্যকে উপলব্ধি কর । এই প্রকারে নানা অমৃত উপদেশের দ্বারা পরমব্রহ্ম শ্রী শ্রী জ্ঞানেশ্বরদেব সকল মানুষের জীবনের অন্ধকার দূর করে আলোয় পূর্ণ করার সহজ সমাধান জানালেন , প্রতিটি সংসারের দুঃখ – জ্বালা – যন্ত্রনা মুক্ত করে সুখ – আনন্দ – শান্তিতে ভরিয়ে তুলতে অমৃত মন্ত্র শোনালেন এবং প্রতিটি জীবনকে আনন্দে পূর্ণ করে তুলতে জীবনের সমাধান সূত্রগুলি উল্লেখ করলেন । শ্রীগুরুর শ্রীমুখ নিঃসৃত সেই সকল অমৃতবানী জীবনের সমাধানসূত্র নামক গ্রন্থগুলিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ।

Vokti Argha

Vokti Argha



*

ভক্ত মানে সদাই ভগবৎ-বন্দনা , প্রনাম , প্রার্থনা, আরতি , ভজনে –পূজনের ঢেউ ওঠে । ভক্তের কাছে ভগবান যেমন আপনজন ,শিষ্যের কাছে গুরুও সেই প্রকার । গুরুই তার ভগবান । হর হরি কৃষ্ণ রাধাও গুরুর ভজনে – পূজন –বন্দনার নানা ভাষা ভক্ত চিত্তে কথা রূপে ফুটে ওঠে আর ভক্ত সেই সকল কথাকে গানের মাধ্যমে , কখনো লেখনী মাধ্যমে প্রকাশ করেন । এখনেও এক ভক্ত তার মনের মধ্যে আঁকা অনন্ত চিন্তাধারার কিছু শ্রীগুরুর শ্রীচরণে ভক্তি-অর্ঘ্য রূপে নিবেদন করেছেন ।

Lila Katha

Lila Katha



*

*

শুদ্ধসত্ত্ব শ্রীগুরু জ্ঞানেশ্বরদেব প্রেমের পারাপার । সেই সচিদানন্দ সাগরে একবার যে এসে পড়ে সে আর ফিরে যেতে পারে না । অলঙ্খনীয় সেই প্রেমের টানে অসংখ্য মানুষের ভীড় । শিক্ষিত – অশিক্ষিত , পাপী – তাপি , সংসার – যোগী , বিলাসী – ভোগী একবার যে আসে সে আর তাকে ছাড়া থাকতে পারে না । শ্রীগুরু হন তাদের প্রাণের ঠাকুর । ঠাকুরও তাদের ছাড়া থাকতে পারেন না । তাদের সঙ্গে করেন নানা লীলা , নানা রঙ্গ করেন পরোক্ষভাবে । তিনিই যে স্বয়ং পরব্রহ্ম তা জীব বুঝবে কেমন করে । তাই ভক্ত সঙ্গে করেন নানা লীলা । কখনো ব্যক্ত লীলা কখনো বা অব্যক্ত লীলা । তাই তিনি তাদের মতো হবে তাদের সঙ্গে মিশতে থাকেন । কারোর চাওয়া – পাওয়া অপূর্ণ থাকে না। যে যা চান তাই পান । তা বাহ্য বিষয়ই হোক আর অধ্যাত্মিক হোক । তবে সাবধান করে বলেন – কামনা বাসনা থাকলে ঈশ্বর লাভ হয় না । তাই ভক্তদের মনকে মলিনতা মুক্ত করে আনন্দের স্রোত বহাতে চাইলেন । সেই আনন্দ হল ঈশ্বর আনন্দ – ব্রহ্মানন্দ । সংযম , ধৈর্য্য ও নিষ্কাম কর্মের উপদেশ দিলেন । সুখ – শান্তি লাভের জন্যে তিনি বলেন – সবই তিনি ( ঈশ্বর ) তাকে ধর । আর অনন্ত অলৌকিক ক্রিয়াকান্ড সূচনা করে ভক্ত মনে বিস্ময়ের উদ্রেক করেন কিন্তু নিজেকে গুপ্ত রাখেন যেন তিনি কিছুই জানেন না । তবুও একান্ত স্নেহের ভক্তদের কাছে ধরা পড়ে যান । কেউ তাকে দেখেন গোপালরূপে , কেউ দেখেন কৃষ্ণরূপে , কেউ বা শিবরূপে কেউ অর্ধনারীশ্বর দেখেন , কেউ হরি - দখেন । তার নিষ্কাম প্রেমে সকলেই পাগল । শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেই যেন মহাভাবে মগ্ন । নিষ্কাম – ত্যাগী – অন্তর্যামী পুরুষোত্তম পরব্রহ্ম তিনি । তিনি বাহ্য বিষয় কিছুই চান না । তিনি চান সকলে নির্মল চিত্তে ঈশ্বর আনন্দ – ব্রহ্মনন্দ ভোগ করুক ।